বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়
বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায় সে সম্পর্কে জানতে অনেকে গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানব বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায় এবং বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর সঠিক নিয়ম।
তাই আপনি যদি বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায় এবং রেমিটেন্স সম্পর্কে
যাবতীয় তথ্য জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে
পড়ুন এবং বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায় জানতে পড়ুন
- প্রবাসী কাদেরকে বলে
- প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা
- রেমিটেন্স কি
- রেমিটেন্স থেকে সরকারের আয় সম্পর্কে জানুন
- বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়
- বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর সঠিক নিয়ম
- বিদেশ থেকে টাকা আসতে কত দিন সময় লাগে জানুন
- বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানোর সহজ নিয়ম
- বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম কোনটি
- বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে বোনাস কত
- বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানুন
- বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানুন
- লেখক এর শেষ মন্তব্য
প্রবাসী কাদেরকে বলে
প্রবাসী মূল্তো তারাই যারা জীবনের সফলতা অর্জনের জন্য দেশের বাইরে গিয়ে বিদেশে
কর্মরত থাকে এবং টাকাও উপার্জন করে। কিছু মানুষ আছেন যারা টাকা উপার্জন এবং
চাকরির জন্য বিদেশে গিয়ে কর্মরত অবস্থায় থাকে তাদেরকে সাধারণত প্রবাসী বলা
হয়।
প্রবাসীরা হচ্ছেন এমন মানুষ যারা জীবনের সফল হওয়ার জন্য নিজের দেশকে ছেড়ে অন্য
দেশে পাড়ি জমায় এবং অর্থ উপার্জন করে নিজের দেশে পাঠায়। এছাড়াও
তারা নিজের দেশকে রেমিটেন্স পাঠিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সচল করে তুলতে সাহায্য করে।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা
আমরা প্রবাসী কথাটা বলতে বুঝে থাকি তারা অনেক টাকা উপার্জন করে। কিন্তু তাদের
টাকায় রয়েছে অনেক কষ্ট এবং সাধনার ছোঁয়া। তারা নিজের দেশকে ত্যাগ করে
অর্থ উপার্জন করে নিজের দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সচল রাখতে অনবরত কাজ করে চলেছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
প্রবাসীরা। তারা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাদের নিজ দেশে রেমিটেন্স পাঠায়।
তারা রেমিটেন্স পাঠায় বলে বাংলাদেশ বর্তমানে কিছুটা স্বাবলম্বী হতে পেরেছে
অর্থনৈতিকভাবে। তাই প্রবাসী ভাই ও বোনেরা আমাদের জন্য আশীর্বাদ।
রেমিটেন্স কি
রেমিটেন্স হল এক ধরনের আর্থিক স্থানান্তর, যেখানে সাধারণত একজন ব্যক্তি বিদেশে
কাজ করে বা অর্থ উপার্জন করে তার নিজ দেশে অর্থ পাঠায়। এটি প্রবাসীরা তাদের
আত্মীয়-স্বজন বা পরিবারের কাছে অর্থ পাঠানোর জন্য ব্যবহার করে থাকেন। আরো
বিস্তারিতভাবে বললে রেমিটেন্স বলতে বোঝায় বিদেশ থেকে অর্থ প্রেরণ করা।
প্রবাসীরা তাদের অর্জিত অর্থ বা আয়ের টাকা দেশে তাদের পরিবার বন্ধু বান্ধব
অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের কাছে পাঠায়। কারণ এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া যা
সাধারণত ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।
রেমিট্যান্স সাধারণত বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে দেশে পাঠানো হয় না বরং এটি ব্যক্তিগত
বা পারিবারিক প্রয়োজনে পাঠানো হয়।
রেমিটেন্স থেকে সরকারের আয় সম্পর্কে জানুন
রেমিটেন্স থেকে বাংলাদেশ সরকার কিভাবে আয় করে থাকে চলুন আজকের এই আর্টিকেল এর
মাধ্যমে তা খুব সহজে জেনে নেওয়া যাক। রেমিটেন্স থেকে সরকার মূলত আয় করে যখন
অন্য দেশ থেকে প্রবাসীরা টাকা পাঠিয়ে থাকে সেটা কোন টাকা নয় সেটা মূলত ডলার
হিসেবে বাংলাদেশে আসে। সেই ডলার যখন বাংলাদেশে আসে তখন সেই ডলার টাকায় রূপান্তর
করতে হয়।
যখন ডলার টাকায় রূপান্তরিত হয় সেখান থেকে সরকারের আয় হয়। যেমন বাংলাদেশের
যে কোন পর্ন ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে সরকারের আই হয় এবং আরো অনেক মাধ্যমে
রেমিটেন্স থেকে সরকারের আয় হয়ে থাকে কারণ এখন বর্তমানে প্রবাসীদের কাছ থেকে
যে আয় হয় সেটা 23.91 বিলিয়ন ডলার। তাহলে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে
পারছেন প্রবাসীরা বর্তমানে কত টাকা বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে।
বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়
বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায় সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেক মানুষ
গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলটি প্রথম
থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো
যায় সে সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন। অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা আছে কোন ধারনা
নেই যে বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায় নিজ দেশে। তাই এ বিষয়
সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
একক লেনদেন
- বিকাশঃ ২৫০,০০০ টাকা
- রকেটঃ ৫০,০০০ টাকা
- নগদঃ ৫০,০০০ টাকা
- উপায়ঃ ৫০,০০০ টাকা
- এম ক্যাশঃ ৫০,০০০ টাকা
মাসিক সীমা লেনদেন
- বিকাশঃ ৫০০,০০০ টাকা
- রকেটঃ ২,০০,০০০ টাকা
- নগদঃ ২,০০,০০০ টাকা
- উপায়ঃ ২,০০,০০০ টাকা
- এম ক্যাশঃ ২,০০,০০০ টাকা
আপনি রেমিট্যান্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশে টাকা পাঠালে লেনদেনের জন্য সর্বোচ্চ আড়াই
লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাঠাতে পারবেন। এবং এর সাথে ২.৫% সরকারি প্রণদান যুক্ত হয়ে
যাবে তাই অনেক মানুষ মনে করে থাকে যে আড়াই লক্ষ টাকার বেশি রেমিটেন্স পাঠানো
হয়। কিন্তু আড়াই লক্ষ টাকার বেশি হলে কখনোই বিকাশ অ্যাড মানি এবং মানি রিসিভ
করতে দেয় না। তাই তখন রেমিটেন্স ও সরকারি ভাতা ব্যতীত কোন কিছুই সম্ভব হবে
না শুধুমাত্র রিসার্চ এর মাধ্যমটি চালু থাকবে।
বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর সঠিক নিয়ম
বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানোর জন্য সাধারণত কোন ব্যাংক বা মানি ট্রান্সফার
কোম্পানির মাধ্যমে আপনারা রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম
আপনি যে দেশে আছেন সেখানকার ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসে গিয়ে অর্থ বা টাকা জমা
দিতে হবে। তারা আপনার নির্বাচিত ব্যাংক একাউন্টে সুবিধা জনক ব্যক্তির একাউন্টে
টাকা পাঠিয়ে দেবে। তবে বর্তমান সময়ে অনলাইন প্লাটফর্ম যেমন বিকাশ নগদ,
রকেট এর মাধ্যমেও খুব সহজে রেমিটেন্স পাঠানো যায়। তাছাড়া কিছু মোবাইল
অ্যাপস রয়েছে যেমনঃ( মানিগ্রাম রিয়া) ব্যবহার করে নিজের মোবাইল থেকেও আপনি খুব
সহজে রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন। তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে রেমিটেন্স
পাঠানোর সঠিক নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া যাকঃ
- রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নির্বাচন করতে হবে যেমন ব্যাংক, মানি ট্রান্সফার কোম্পানি কিংবা মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা(বিকাশ, রকেট কিংবা নগদ) ইত্যাদি।
- এরপর আপনি যে দেশে অবস্থান করছেন, সেখানকার ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজে গিয়ে আপনার অর্থ জমা দিতে হবে।
- আপনি যাকে টাকা পাঠাবেন তার নাম, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর যদি প্রযোজ্য হয় এবং যে ব্যক্তি টাকা পাঠালে তার বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হবে।
- টাকা পাঠানোর পর আপনাকে একটি রশিদ বা ট্রেকিং নম্বর দেয়া হবে যা দেখে আপনি নিশ্চিত হবেন যে আপনার টাকা পৌঁছেছে কিনা।
এছাড়াও বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে আপনার
আত্মীয়-স্বজনের কাছে টাকা পাঠাতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে
গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে টাকা পাঠাতে হবে।
আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য প্রণদান
দেওয়া হয়ে থাকে। তাই এ বিষয়ে সম্পর্কে খোঁজ রাখা ভালো।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে
আপনি যদি বৈধ উপায়ে টাকা পাঠান তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে ২.৫% প্রণদান
পাবেন। তাই অবৈধ পদ যেমন হুন্ডি পরিহার করা উচিত।
টাকা পাঠানোর আগে অবশ্যই নিশ্চিত হবেন যে আপনি সঠিক তথ্য দিয়েছেন কিনা। তা না
হলে আপনার টাকা যার কাছে পাঠাবেন তার কাছে পৌঁছাবে না।
এরপর টাকা পাঠানোর ফ্রি এবং চার্জ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। যাতে করে আপনি কোন
অপ্রত্যাশিত খরচ থেকে বাঁচতে পারেন।
সব সময় যাচাই করবেন আপনি যে মাধ্যমটি ব্যবহার করছেন সেটি নিরাপদ কিনা।
বিদেশ থেকে টাকা আসতে কত দিন সময় লাগে জানুন
বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানোর জন্য বেশ কিছু পরিস্থিতির উপর
নির্ভর করে যেমন ট্রান্সফারের উপযুক্ত উপায় বা ব্যাংকের নীতি,
ব্যাংক এক্সেঞ্জ, ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং এবং ট্রান্সফার সার্ভিস এর
মাধ্যমে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানো হয়ে থাকে।
যেহেতু বিদেশ থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন ওপারে টাকা আসে তাই একের ক্ষেত্রে এক এক
রকমের সময় লাগতে পারে। আর বিদেশ থেকে বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়া গুলোর
মাধ্যমে সাধারণত টাকা আসে সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
- ব্যাংক ট্রান্সফার
- রেমিটেন্স কোম্পানি
- টোটাল সার্ভিস
- ইউনিট পেমেন্ট ইত্যাদি
তাছাড়াও অন্যান্য সার্ভিসের মাধ্যমে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা আসে। বিদেশ থেকে
বাংলাদেশের টাকা আসতে কত সময় লাগে সেটি নির্ভর করে আপনি কোন পদ্ধতিতে টাকা
পাঠাচ্ছেন। সাধারণভাবে অনেক সময় ট্রান্সফার করা টাকা এক থেকে ছয় দিন পর্যন্ত
সময় নিতে পারে বাংলাদেশে আসতে।
বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানোর সহজ নিয়ম
বিদেশে কষ্ট করে উপার্জিত টাকা সকল প্রবাসীরাই তার পরিবার-পরিজনের কাছে
পাঠিয়ে থাকে, এই নিয়ে অনেকেরই চিন্তার শেষ নেই কিভাবে টাকা বাংলাদেশে পাঠানো
যায়। তাহলে চলুন এবার আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে খুব সহজে জেনে নিই বিদেশ থেকে
বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম গুলোঃ
ব্যাংক ট্রান্সফারঃ আপনি চাইলে বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা
পাঠাতে পারেন। আপনি একটি নির্দিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদিত হতে পারেন। এবং
ব্যাংকে টাকা পাঠাতে হলে আপনাকে ব্যাংকের সকল নিয়ম নীতি অনুসরণ
করতে হবে।
রেমিটেন্স সার্ভিসঃ আপনি চাইলে রেমিটেন্স কোম্পানি ব্যবহার করেও টাকা
পাঠাতে পারেন্, যেমন ওয়েস্টার্ন ইউনিয়্ন, মানিকগ্রাম ইত্যাদি। আপনি নিখুঁত তম
ব্যাংকে রেমিট্যান্স সার্ভিস কেন্দ্রে গিয়ে টাকা পাঠাতে পারবেন।
ইমনি ট্রান্সফারঃ আপনি চাইলে ইমন ই ট্রান্সফার পেমেন্ট সিস্টেমে খুব সহজে
বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠাতে পারবেন।
অনলাইন রেমিটেন্স সার্ভিসঃ আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের
টাকা পাঠাতে পারবেন যেমন, বিকাশ, নগদ , রকেট , ইতালিয়ান,পোস্ট এবং ইয়ন
ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞ ট্রান্সফার সার্ভিসঃ কিছু ব্যাংক এবং রেমিটেন্সম কোম্পানি
আছে যারা অতি দ্রুত বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সার্ভিস প্রদান করে
থাকে। তাই আপনি চাইলে এই মাধ্যমেও টাকা পাঠাতে পারেন।
বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম কোনটি
অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা আছে যারা জানতে চাই টাকা পাঠানো সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম
কোনটি। কারণ তাদের কষ্টে অর্জিত টাকা যেন নষ্ট না হয়ে যায় এজন্য প্রত্যেক
প্রবাসীর জানা উচিত কোন মাধ্যমে টাকা পাঠানো সবচেয়ে নিরাপদ। আমার মতে টাকা
পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হচ্ছে ব্যাংক। কারণ আপনি যদি ব্যাংকের মাধ্যমে
টাকা পাঠান তাহলে কোন ভাবে সে টাকা নষ্ট হওয়ার সুযোগ থাকে না আর আপনার পরিবারের
কাছে নিরাপদে টাকা পৌঁছে যায়।
তবে আপনি চাইলে অন্যান্য মাধ্যমেও টাকা পাঠাতে পারেন তবে সেটা নিরাপদ নয়। বিদেশ
থেকে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে অনিরাপদ মাধ্যম হচ্ছে হুন্ডি। এর মাধ্যমে টাকা পাঠালে
আপনি যেকোনো সময় বিপদের মুখোমুখি হতে পারেন। এছাড়াও আপনি ব্যাংকে টাকা
পাঠানোর মাধ্যমে আপনার পরিবার ব্যাংকের কাছ থেকে ২.৫% রেমিটেন্স বোনাস পাবে। আর
ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে যে কোন জায়গায় থেকে উত্তোলন করা খুব সহজ
এবং নিরাপদ। তাই বলা যায় যে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানোর সবচেয়ে
নিরাপদ মাধ্যম হচ্ছে ব্যাংক।
বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে বোনাস কত
বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠালে বোনাস কত এ বিষয়ে জানতে অনেকে গুগল সার্চ করে
থাকে। তাহলে চলুন আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে খুব সহজে জেনে নেওয়া যাক বিদেশ
থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠালে কত টাকা বোনাস দেওয়া হয়।
সরকারের বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে আপনি যদি রেমিটেন্স পাঠান তাহলে আপনাকে ২.৫% নগদ
প্রণোদনা বোনাস প্রদান করা হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, কেউ যদি এক লক্ষ
টাকা সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা বিদেশ থেকে বৈধভাবে পাঠায় তাহলে প্রাপক ২,৫০০ টাকা
বোনাস পাবেন বা তার মোট টাকার পরিমান হবে ১,০২,৫০০ টাকা।
বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানুন
বিদেশ থেকে বাংলাদেশের রেমিটেন্স পাঠানোর সবচেয়ে অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে
ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানো। তাই আপনি যদি বিদেশ থেকে ইসলামী
ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকে আমাদের সাথে থাকুন।
সর্বপ্রথম আপনার একটি নিজস্ব সচল একাউন্ট থাকতে হবে। এরপরে ইসলামী
ব্যাংকের সেলফিন সার্ভিস এর সাথে আপনাকে যুক্ত হতে হবে। এরপরে বিদেশে ইসলামী
ব্যাংকের ফরেন রেমিট্যান্স হাউজের যেকোনো একটি শাখা আপনাকে খুজে বের করে সেখানে
গিয়ে সে দেশের মুদ্রা জমা দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট কালেক্ট করে নিয়ে
সাবমিট করতে হবে এরপর তারা আপনাকে আপনার টাকা দেশের ব্যাংকে ট্রান্সফার করে
দিবেন।
এছাড়াও বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম কয়েকটি মাধ্যম হলো সোনালী ব্যাংক ,
অগ্রণী ব্যাংক , ডাচ বাংলা ব্যাংক সহ আরো অন্যান্য ব্যাংকে আপনি খুব সহজে বিদেশ
থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠাতে পারবেন। প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক কিছু পার্থক্য থাকলেও
প্রায়ই সকল ব্যাংকের টাকা পাঠানোর নিয়ম একই হয়ে থাকে।
বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানুন
বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর জন্য আপনি দুটি পদ্ধতি অনুসরণ
করতে পারেন একটি হচ্ছে সোনালী ই-ওয়ালেট অথবা সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে। ই-ওয়ালেট
ব্যবহার করার জন্য সর্বপ্রথম অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে হবে এবং সেখানে
প্রয়োজনীয় তথ্য এবং অর্থ প্রদান করে আপনার লেনদেন সম্পূর্ণ করতে হবে। এছাড়াও
আপনি ব্যাংক শাখায় গিয়েও সরাসরি সেবা নিতে পারেন।
সোনালী ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে টাকা পাঠানোর নিয়মঃ
সর্বপ্রথম আপনাকে গুগল প্লে স্টোর অথবা অ্যাপেল অ্যাপ স্টোর থেকে সোনালী ই-ওয়ালেট
অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে হবে।
এরপরে সোনালী ই ওয়ালেট অপশনটিতে যেতে
হবে।
এর পরে আপনাকে প্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং পিন নম্বর লিখতে হবে
এবং
লেনদেনের পরিমাণ লিখতে হবে এবং চালিয়ে যান বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এবার আপনার ফোনে একটি ওটিপি আসবে সেটি প্রবেশ করিয়ে submit বাটনে ক্লিক করতে হবে
তাহলে আপনার প্রক্রিয়াটি শেষ হবে।
সোনালী ব্যাংক এর মাধ্যমে সরাসরি টাকা পাঠানোর নিয়ম
সর্বপ্রথম আপনি যে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি থেকে টাকা পাঠাবেন তাদের সাথে
যোগাযোগ করতে হবে।
এরপর তাদেরকে আপনার সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর কোড এবং অন্যান্য
প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।
তারপর তারা আপনার পাঠানো অর্থ সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আপনার একাউন্টে জমা দিয়ে
দেবে।
আপনি যদি বিদেশে থেকে থাকেন তাহলে সোনালী সেবা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বিদেশে
বসেই খুব সহজে লেনদেন করতে পারবেন। এছাড়াও বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে
কিছু ব্যাংক এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের চার্জ নিয়ে থাকে তাই টাকা পাঠানোর
আগে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া অনেক ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
লেখক এর শেষ মন্তব্য
আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনেছি বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর সঠিক
নিয়ম, বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়, এবং বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকের
মাধ্যমে কিভাবে টাকা পাঠানো যায় এ টু জেড তথ্য। তাই এক কথায় বলা যায় প্রবাসী
এবং রেমিটেন্স সম্পর্কিত এ টু জেড তথ্য আজকের পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরা
হয়েছে।
হে আমার প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা আপনারা যদি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে
থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন। আর আর্টিকেলের মধ্যে
যদি কোন ভুল ত্রুটি হয় তাহলে কমেন্ট করবেন সংশোধন করার চেষ্টা করব ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url